Friday, November 15, 2024
Homeশিক্ষাঙ্গনপহেলা বৈশাখের প্রস্তুতিতে জাবি

পহেলা বৈশাখের প্রস্তুতিতে জাবি

শিক্ষা ডেস্কঃ

“মানুষে মানুষে সম্প্রীতি বয়ে যাক, প্রকৃতি ও প্রত্যয়ে এসো বৈশাখ” প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে ১লা বৈশাখ ১৪২৯ ও বর্ষবরণ উদযাপনের ব্যাপক প্রস্তুতি হাতে নিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। জাবির চারুকলা বিভাগে দেখা যায়, পহেলা বৈশাখের প্রস্তুতিতে সেখানকার শিক্ষার্থীরা ব্যস্ত সময় পাড় করছে। করোনায় স্বজন হারানোর শোক আছে, বিশ্বজুড়েই একটি অস্থিরতা বিরাজ করছে, যুদ্ধ চলছে। এসব থেকে মুক্তির আহ্বান থাকবে মঙ্গল শোভাযাত্রায়।


করোনার দীর্ঘ সবসময় পার হয়ে জীবনযাত্রায় ফিরে আসছে স্বাভাবিক ছন্দ। এই নতুন স্বাভাবিক অবস্থাকে স্বাগত জানানো হবে এবারের পয়লা বৈশাখে ঐতিহ্যবাহী মঙ্গল শোভাযাত্রায় থাকবে সব হিংসা-বিদ্বেষ নেতিবাচকতা থেকে মুক্তির আহ্বান।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলা ভবনে গিয়ে দেখা গেল মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বর্ণান করে তুলতে চলছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ।
পহেলা বৈশাখ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক শাকিল বললেন, “আবহমান বাংলার চিরচেনা এই উপাদান গুলোর মাধ্যমেই নতুন বছরে ভরপুর কর্মময় একটি পরিবেশ তাকে ধরা হবে। বেদনা, হিংসা-বর্বরতা থেকে মুক্তি আসুক, বুদ্ধির উদয় হোক এই কামনা থাকবে এবারের নববর্ষের উৎসবে।”

পহেলা বৈশাখ উদযাপন কমিটির সভাপতি সহকারী অধ্যাপক শামীম রেজা জানালেন,
“এবার আমরা দুইটি মোটিভ নিয়ে কাজ করছি ময়ূর, সাপ এবং মাছ। ময়ূর এবং সাপের মাটিতে দেখতে পাবেন ময়ূর একটা সাপকে খেয়ে ফেলতেছে। বাংলার লোক বিশ্বাস যে আমাদের ঘরে যদি ময়ূর এবং সাপের মোটিফ থাকলে কোন অমঙ্গল আসেনা।মাছ উর্বরতার প্রতীক।”

৪৪ তম ব্যাচ এবারের আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছে। ৪৪ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাগর কর্মকার জানালেন, “পুরাতন কলাভবনে বৈশাখী হাটের আয়োজন করেছি। এই প্রস্তুতি যজ্ঞ এখন প্রায় শেষের দিকে। মঙ্গল শোভাযাত্রায় আবহমান বাংলার ঐতিহ্যের নানা অনুষঙ্গের প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তুলতে হাতপাখা, মাছ, প্রজাপতি, লোকজ সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দিয়ে পালকি, ঘোড়া, হাতি, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুনসহ বাঘ ও প্যাঁচার ছোট-বড় হরেক রঙের বিভিন্ন মুখোশ তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে সবাই। শিক্ষার্থীরা মিলে আঁকছে নানা রকম ছবিও। এ সব কাজে ভালোলাগার বহিঃপ্রকাশ আর আবেগের যেন কমতি নেই কারও মাঝে।”

চারুকলার বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী অধ্যাপক ফারহানা তাবাসসুম বলেন, ‘বাংলা বর্ষবরণ আমাদের প্রাণের উৎসব, এটি কোনও নির্দিষ্ট ধর্মের বা গোষ্ঠীর উৎসব নয়। কিন্তু যারা একে একটি ধর্মের উৎসব বলে এই উৎসবের সর্বজনীনতা নষ্ট করে তাদের সম্পর্কে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। পহেলা বৈশাখ আমাদের বাঙালি জাতির নিজস্ব সংস্কৃতি।’

সোমবার (১১ এপ্রিল) রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত)স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বর্ষবরণের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি তুলে ধরা হয়৷ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দিনের শুরুতেই সকাল ৮:১৫ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে উপাচার্য শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। এরপর সকাল ৯:৪৫ টায় বিভিন্ন অনুষদ, অফিস এবং শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হবে। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে গিয়ে শেষ হবে।

সকাল ১১টায় বাংলা বিভাগের আয়োজনে নতুন কলা ভবনের সামনে মহুয়া তলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কর্তৃক আয়োজিত হবে। ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র এবং শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের যৌথ উদ্যোগে বিকেল ৩:৩০ টা থেকে বিকেল ৫:০০ টা পর্যন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে।

এছাড়া, পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানাদিতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এদিন দাপ্তরিক কাজ ব্যতিত ক্যাম্পাসে মটর সাইকেল প্রবেশ/চলাচল বন্ধ থাকবে। এছাড়া বহিরাগত গাড়ীর চলাচল সীমিত রাখা হবে এবং কেন্দ্রীয় মসজিদের পশ্চিমে এবং জাবি স্কুল কলেজের মাঠে গাড়ী পার্কিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।


নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, মুখোশ পরে মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করা যাবে না, তবে মুখোশ হাতে নেয়া যাবে। কোনো রং ছিটানো যাবে না। কেউ রং ছিটালে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। অংশগ্রহণের সুবিধার্থে পরিবহন সেবা চালু থাকবে। বিকাল ৫:০০ টার মধ্যে সকল অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার জন্য বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular