গবি প্রতিনিধি:
অবশেষে প্রায় ৫ বছর ৫মাস পর পুনরায় ব্যাচেলর অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন (বিবিএ) বিভাগ পরিচালনার অনুমতি পেয়েছে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয় (গবি)।
বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বাংদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এক চিঠির মাধ্যমে অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এতে বলা হয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ২৪ (৩) ধারা মোতাবেক কলা ও সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধীনে বিবিএ প্রোগ্রামটির কারিকুলাম নিম্নোক্ত শর্তে ০৪ (চার) বছরের জন্য অনুমোদন প্রদান করা হলো :
১/ ১৪০ ক্রেডিট আওয়ারস সংবলিত উক্ত প্রোগ্রামের সিলেবাস/কারিকুলামে পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে কমিশন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে। কমিশন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত ডিগ্রী টাইটেল এর কোনো প্রকার পরিবর্তন করা যাবে না। প্রোগ্রামটি অবশ্যই গণ বিশ্ববিদ্যালয়, নলাম, পোঃ মির্জানগর ভায়া সাভার ক্যান্টনমেন্ট, সাভার, ঢাকা ১৩৪৪ ঠিকানাস্থ ক্যাম্পাসে পরিচালনা করতে হবে, অন্য ক্যাম্পাসে পরিচালনা করা যাবে না।
২/ প্রোগ্রামটি অবশ্যই Dual Semester ভিত্তিতে পরিচালনা করতে হবে। প্রোগ্রামটিতে প্রতি সেমিস্টারে সর্বোচ্চ ৪০ (চল্লিশ) জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে। প্রোগ্রামটিতে ভর্তির সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে কমিশন প্রণীত ইউনিক শিক্ষার্থী পরিচিতি নম্বর সৃজন সংক্রান্ত ম্যানুয়াল এর ভিত্তিতে একটি পরিচিতি নম্বর প্রদান করতে হবে এবং প্রোগ্রাম/ কোর্স সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত উক্ত আইডি /রেজিষ্ট্রেশন নম্বর বহাল থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত সনদপত্র ও মার্কশীটে উক্ত আইডি/ রেজিষ্ট্রেশন নম্বর উল্লেখ থাকতে হবে।
৩/ প্রোগ্রামটি ডিস্ট্যান্স লার্নিং/ সন্ধ্যা/ শুক্র-শনি (উইকেন্ড) ইত্যাদি নামে পরিচালনা করা যাবে না।
৪/ কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত প্রোগ্রামে/ কোর্সে কোনো শিক্ষার্থীকে ভর্তি করার ক্ষেত্রে কমিশন প্রণীত নির্ধারিত ভর্তির যোগ্যতা ও নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে।
এতে আরো বলা হয়, কমিশন প্রণীত নির্ধারিত ভর্তির যোগ্যতা ও নীতিমালা অনুসরণ করে স্নাতক পর্যায়ের এ প্রোগ্রামটিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে।
এ বিষয়ে, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো উপাচার্য আবুল হোসেন বলেন, ‘ইউজিসির শর্ত পূরণ করে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ বিভাগ অনুমোদনের বিষয়ে আবেদন করার সাপেক্ষে বিভাগটি অনুমোদিত করেছে ইউজিসি। যেটা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অনেক বড় একটি পাওয়া।’ আগামী সপ্তাহ থেকে প্রতি ব্যাচে ৪০ জন করে ভর্তি নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে পুনরায় অনুমোদনের খবরে খুঁশির হাওয়া বইছে বিভাগটির সাবেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে। শহীদুল ইসলাম শহীদ নামে ২০১৩-১৪ সেশনের এক শিক্ষার্থী বলেন, এ সমস্যা সমাধানে আমরা অনেক কাঠখড় পুড়িয়েছি, অনেকবার আশাহত হয়েছি। শেষে আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। হঠাৎ এ খবরটা শুনে কতটা যে খুঁশি হয়েছি বলার বাহিরে। সার্টিফিকেট পাবো বলে আবার আশায় বুক বেঁধেছি। দেখা যাক, এক্ষেত্রে প্রশাসন কি ভূমিকা রাখে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বিবিএ সহ ৫টি কোর্সের অনুমোদন নেই বলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এবং ২০১৯ সালে বেশ কয়েকবার জাতীয় দৈনিকে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এরই ধারাবাহিকতায় বিভাগ অনুমোদনের দাবিতে ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর অর্ধদিবস এবং ১৩ ডিসেম্বর পূর্ণ দিবস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেন ঐ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
পরবর্তীতে, ২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল থেকে বৈধ উপাচার্য ও অনুমোদনহীন ৫ টি বিভাগ নিয়ে দীর্ঘ ৬৮ দিনের লাগাতর আন্দোলনও করে শিক্ষার্থীরা।