ঢাবি প্রতিনিধি:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করে বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাধারণ মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের লক্ষ্যে আজীবন কাজ করে গেছেন। তিনি জীবনের মাত্র ১২ ভাগ সময় পরিবারকে দিয়েছিলেন। বাকী ৮৮ ভাগ সময় তিনি গণমানুষের সেবায় ব্যয় করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর এই মহান আত্মত্যাগের কথা কেউ যেন ভুলে না যায়
আজ শনিবার (১৫ আগস্ট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬ তম শাহাদাতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনস্থ অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্য বলেন, অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অমর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ইতিহাসের এক ঘৃণ্য দিন। এদিনেই ঘাতকের নির্মম বুলেটে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে শাহাদত বরণ করতে হয়।
জাতির পিতার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের নানান দিক তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধু শিক্ষাখাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। শিক্ষাকে জাতীয়করণ, শিক্ষা ব্যবস্থায় স্বায়ত্তশাসন প্রদান এবং শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দিয়ে তিনি একটি সৎ, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জাতি গঠন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ঘাতকরা তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ হতে দেয়নি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন এবং তাঁর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রঞ্জন কর্মকারসহ অফিসার্স এসোসিয়েশন, কর্মচারী সমিতি, কারিগরি কর্মচারী সমিতি ও চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ এবং সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম শীর্ষক এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। দিবসটি উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান ভবন ও হলসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয় ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকালে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ ধানমণ্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এছাড়া, বাদ যোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিয়াসহ প্রত্যেক হল ও আবাসিক এলাকার মসজিদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল শহীদের রূহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল এবং বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার অন্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।