বিলাল মাহিনী
দিনমণি অস্তাচলগমনোদ্যোগী দেখে চাষি ফিরলো বাড়ি
শিং পুঁটি কৈ মাছের ঝোলে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে শ্রান্ত শরীরে শুয়ে পড়লো
ঘের-বেড়ির পাড় ছুঁই ছুঁই বান-বর্ষার পানিতে
ঘুম কি ধরে চোখে!
বিষন্নতা মুড়ি দিয়ে তবুও ঘুমের ভান
ক্লান্তির জালে আটকা পড়ে দেহ।
মাঝ রাতে শো শো শব্দে ভীষণ বারি বর্ষণ
বাড়ছে নদী-খালের জল
ডুবছে মাছের ঘের-বেড়ি, ডুবছে কৃষকের ভবিষ্যৎ
পাড়ে হাঁটুজল
কৃষকের ঘাম ঝরানো সঞ্চয়ে কেনা রেনু-পোনারা উজানের জল বেয়ে সারি ধরেছে বদ্ধ জীবন থেকে মুক্তির সুখে।
ফজরের আগেই ঘুম ভাঙে চাষীর
কাস্তে কোদাল হাতে পোলা-মেয়ে নিয়ে ছুটে ঘেরের পাড়ে
দৌড়ে কী হবে?
রাতের ভারী বর্ষণে সব শেষ!
নোনাজলে ভরে উঠে চাষির নয়ন।
হরেক রকম সবজি ছিলো পাড়ে
সব ডুবছে, মরেছে
এবার দাম রাড়বে আলু পেয়াজ সবজির
সর্বহারা চাষার ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ শুরু হবে।
রূপালি মাছে হাড়ি ভরে বেচার স্বপ্ন, স্বপ্নই থেকে গেলো
ভাদ্রের বরষায় প্লাবিত সুখ
মেঘে ঢাকা জীবনে আলোর দেখা মেলা ভার!
ওদিকে আবার কিস্তির চিন্তা
সপ্তাহান্তে বারো’শ পঁচিশ
নির্বাক চিত্তে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে চাষি, ঘেরের পাড়ে
হাত ধরে ভরসা দেওয়ার কেউ আছে কি?
নিরুপায় কৃষক!
কবির আকুতি-
তুফান ঝড়েও চাষি ভাই
ছাড়িও না হাল,
বিফল হলেও আজ
সফল হবে কাল।