নবদূত রিপোর্ট:
আবরার হত্যার রায়ে খুশি বুয়েট শিক্ষার্থীরা, দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
অবশেষে দুই বছর তিন মাস পর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ২৫ আসামির মধ্যে ২০ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বুধবার দুপুরে ঢাকা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান। এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা।
দুপুরে সরেজমিনে বুয়েটে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, আদালতের এই রায়ে তারা সন্তুষ্ট। এর মাধ্যমে আবরার ও তার পরিবার বিচার পেলো। এসময় অতি দ্রুত এই রায় কার্যকরের দাবি জানান।
এই রায়ের প্রেক্ষিতে তাদের কোনো কর্মসূচি আছে কি না- জানতে চাইলে তারা জানান, এই বিষয়ে তারা একসঙ্গে আলোচনা করে কর্মসূচি নির্ধারণ করে পরে জানানো হবে।
রায় ঘোষণার বিষয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ফেসবুক পেইজে একটা পোস্টে এই পর্যন্ত ২ হাজারের মতো রিয়েক্ট এবং তিনশর বেশি কমেন্ট পড়ে। কমেন্টে শিক্ষার্থীরা সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে রায় কার্যকরের দাবি জানান।
এর আগে, সকালে আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার ২২ আসামিকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এ নেওয়া হয়। দুপুর ১২টার দিকে রায় ঘোষণা করা হয়। এসময় আদালতে উপস্থিত নিহত আবরারের পরিবার। এই মামলার তিন আসামি পলাতক রয়েছেন।
গত ২৮ নভেম্বর ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু ওইদিন রায় প্রস্তুত না হওয়ায় পরবর্তী ৮ ডিসেম্বর রায়ের জন্য তারিখ রাখেন বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান।
২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বিভিন্ন চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন আবরার ফাহাদ রাব্বী। এর জের ধরে পরদিন ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে তার কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মী।
তারা আবরারের ১০১১ নম্বর রুমে গিয়ে রাতে তাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তার ল্যাপটপ, দুটি মোবাইল ফোনসহ ২০১১ নম্বর রুমে নিয়ে আসে। এরপর ওই কক্ষে আবরারকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পরদিন ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন আদালত। মোট আসামির মধ্যে ২২ জনকে বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তারা কারাগারে। পলাতক রয়েছে তিনজন। তারা সবাই বুয়েট ছাত্রলীগ কর্মী।
বিচার চলাকালে ৬০ সাক্ষীর মধ্যে ৪৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। ২১টি আলামত ও ৮টি জব্দ তালিকা আদালতে জমা দেওয়া হয়।