Monday, December 23, 2024
Homeশিক্ষাঙ্গনউপাচার্যের পদত্যাগই একমাত্র সমাধান : শাবিপ্রবি প্রসঙ্গে নুর

উপাচার্যের পদত্যাগই একমাত্র সমাধান : শাবিপ্রবি প্রসঙ্গে নুর

নবদূত রিপোর্ট:

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগই একমাত্র ও সহজ সমাধান বলে মনে করেন গণ অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।

রোববার (২৩ জানুয়ারি) শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

নুরুল হক নুর বলেন,  একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য যখন ছাত্রদেরকে পেটানোর জন্য পুলিশ এবং তার একটা অনুগত ছাত্র সংগঠনকে ব্যবহার করে সে উপাচার্যকে নৈতিকভাবে কারোই সমর্থন করা উচিত না। ছাত্ররা প্রথমে আন্দোলন করেছিল খাবারের মানসহ কয়েকটি বিষয় নিয়ে এবং পরবর্তীতে প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবি করেছিল। সেটার সমাধান না করে তিনি ছাত্রদের ওপর হামলা করিয়েছেন, অনেক ছাত্র আহত হয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে বেশ কিছু ছাত্র অনশন করল কিন্তু এখনো পর্যন্ত উপাচার্য ছাত্রদের কাছে যেতে পারলেন না। তিনি এটা না করে তার অনুগত একটা শিক্ষক অংশকে নামিয়ে দিলেন তার পক্ষ নেওয়ার জন্য। এটা খুবই নিম্ম মানের চিন্তাভাবনা।

তিনি আরো বলেন, আমরা দেখেছি বঙ্গবন্ধু ৭২ সালে দেশে ফিরে এসে অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমেদ চৌধুরী, আবুল ফজল স্যার থেকে শুরু করে জ্ঞানিগুণী ব্যক্তিদের উপাচার্য হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। আর আজকের উপাচার্যরা ছাত্র এবং সারাদেশের বিবেকবান মানুষেরা তাদের অপসারণ চাইলেও তারা পদত্যাগ করতে চায় না। কারণ হচ্ছে তারা শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পান্ডিত্য দিয়ে উপাচার্য হতে পারেননি। উপাচার্যকে একটা লাভজনক পদ হিসেবে মনে করেছেন এই কারণে পদটা একবার পেয়ে ধরে রাখার জন্য নানা অপতৎপরতা করছেন, দুর্বৃত্তায়নের সাথে নিজেদের জড়াচ্ছেন এটা উচিত না।

ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, আমি মনে করি যে, আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এখন যে অবস্থা ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগ এবং উন্নয়নমূলক প্রকল্পের নানা ধরণের দুর্নীতি অনিয়ম  ইউজিসি তদন্ত করছে। বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের বিরুদ্ধে প্রমাণও পেয়েছে। যদি এই প্রেক্ষাপটে যদি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ভিসির বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যারা প্রশাসন থাকে তারাও এমন আচরণ করবে। সবার দাবির পরও এই উপাচার্যের অপসারণে যদি কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে সারাদেশের ছাত্র সমাজ এবং বিবেকবান মানুষদের অসম্মান করা হবে

সরকারের ভুল সিদ্ধান্ত রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৩ জানুয়ারি থেকে ছাত্ররা আন্দোলন করছে, আজ ১০দিন। কেন তাদের প্রতি কর্ণপাত না করে এইরকম দুর্বৃত্ত একজন উপাচার্যকে সরকার প্রশ্রয় দেবে। আমি মনে করি সরকারের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে এই আন্দোলনটা আজকের এই পর্যায়ে এসেছে। আন্দোলনটা শুধুমাত্র শাবিপ্রবিতে সীমাবদ্ধ নেই। সারাদেশের ছাত্ররা, শিক্ষক ও সচেতন নাগরিকরা এই বিষয়টি নিয়ে কনসার্ন এবং তারাও উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের অভিমত ব্যক্ত করছেন।

পদত্যাগই সমাধান উল্লেখ করে তিনি বলেন,
উপাচার্য হচ্ছে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবক। অভিভাবক যখন অভিভাবক সুলভ আচরণ করতে না পারে, ছাত্রদেরকে পেটানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড নিয়ে যান এবং ছাত্রদের আহত করেন। তখন কিভাবে তিনি এ পদে থাকবেন। শিক্ষার্থীদের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিটি যৌক্তিক। এটিই একমাত্র এবং সহজ সমাধান।

ডাকসু নেতৃবৃন্দের কোনো ভূমিকা থাকবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তো এই বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। ছাত্রদের একটা সমস্যা তারা দাবি জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ মানেনি, তারা একটা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে শিক্ষামন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিবে। কিন্তু তারা যদি ছাত্রদের যুক্তি সঙ্গত দাবি-দাওয়া আমলে না নিয়ে তাদের ওপর নির্যাতন নিপীড়ন চালায়। তাহলে তো আমরাও আমাদের অভিভাবকের জায়গা থেকে ছাত্রদের সাথে সংহতি জানিয়ে রাস্তায় নামতে বাধ্য হবো। আমরা আজ সাবেক ডাকসু নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ আলোচনা করেছি। আমরা মনে করি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংকটে সাবেক ছাত্র নেতাদের একটা উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

RELATED ARTICLES

Most Popular