Saturday, November 16, 2024
Homeসারাদেশযশোরের ঝিকরগাছার নববধু মিনারার রহস্য জনক মৃত্যু

যশোরের ঝিকরগাছার নববধু মিনারার রহস্য জনক মৃত্যু

জেলা প্রতিনিধি, যশোর :

যশোর জেলার ঝিকরগাছার শিমুলিয়া ইউনিয়নের শেয়াল ঘোনা গ্রামের মন্টু হোসেনের মেয়ে মিনারা খাতুন (২২) নামের নববধুর মৃত্যু যেনো রহস্যজনক। হত্যা না কি আত্মহত্যা এই নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মিনারার সাথে একই ইউনিয়নের সাগরপুর গ্রামের মশিয়ার রহমানের ছেলে বাবুল হোসেন (২৭) এর সাথে গত ১২-০১-২০২২ ইং তারিখে পারিবারিক ভাবে দেখাশুনার মাধ্যমে বিবাহ হয়। কিন্ত মিনারার গায়ের হলুদের গন্ধ ও মেহেদীর লাল রং যেন শেষ হতে না হতেই যৌতুক ও মোটর সাইকেলের দাবির কাছে স্বামী ও শাশুড়ির নির্যাতনের নিকট মাথা নত করে রহস্য জনক ভাবে গত ২৬-০২-২০২২ ইং তারিখে দুপুর ১২:৩০ মিনিটের দিকে প্রান দিতে হল মিনারাকে।এমন টিই দাবি করেন মিনারার পিতৃকুল।

বাবুলের পরিবার থেকে সংবাদ পেয়ে মিনারার পরিবারের লোকজন সেখানে গিয়ে দেখেন, তাদের মেয়ের মৃত লাশ পড়ে আছে।

মিনারার পরিবারের দাবি, আমরা মিনারার আত্মহত্যার কোন আলামত দেখতে পাইনি। যে চিহ্ন দেখা গেছে সেটা আঘাতের, আত্মহত্যার নয়।

কিন্ত বাবুলের পরিবার জানায়, সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সেখানে মিনারার পরিবারের দাবি মিনারা আত্মহত্যা করেনি, তার গলায় রশি বা অন্য কিছুর দাগ নাই, যে ক্ষত চিহ্ন দেখা গেছে সেটা অন্য কিছুর। তাকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার পায়তারা করে চলেছেন বাবুলের পরিবার ও ওই গ্রামের কিছু অসাধু ব্যক্তি। এ বিষয়ে সরেজমিনে যেয়ে জানতে চাইলে
মিনারার মাতা বলেন, আমার মেয়ে মরতে পারেনা সে একজন শিক্ষিতা সচেতন মেয়ে, তাকে মারা হয়েছে।

তিনি আরও জানান,
মিনারার গলায় শক্ত কিছু দিয়ে আঘাত করে মেরে ফেলেছে। মিনারা মরেনি ওরা ওকে মেরে ফেলেছে। আমার মেয়ে ফোনে আমার সাথে কথা বলবে, তাও বলতে দেয়নি বা দিত না তারা।

তারা আমার মেয়েকে বলতো, টাকা নিয়ে আয়, গাড়ী দিতে বল। বাবুল ও তার পরিবার অর্থলোভী,আমরা যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমি প্রশাসনের নিকট দাবি জানাই সুষ্ঠু তদন্ত পুর্বক যেন সঠিক বিচার হয়। না হলে হাজারো মিনারার জীবন দিতে হবে।

এসব কথা বলতে বলতে মিনারার মাতা অঝোরে ক্রন্দন করতে থাকেন। এক পর্যায় তিনি অচেতন হয়ে পড়েন।

জানতে চাইলে মিনারার বড় বোন মনিরা বলেন, আমার বোনের বিয়ে হওয়ার কয়েক দিন পরই বাবুলের মা ও বাবুল চার লক্ষ টাকা ও মোটর সাইকেল দিতে হবে বলে যৌতুক দাবি করে।

বিয়ের মেহেদির রং যেতে না যেতেই শুরু করে শারিরীক নির্যাতন, মিনারা আমার সাথে বলে যে ওরা টাকা ও মোটর সাইকেল চাই বাবুল আমাকে বলে তোমার চাইতে ভাল মেয়ে আমি বিয়ে করতে পারব পরিবার তোমাকে দেখে দিলে কি হবে টাকা ও গাড়ী না দিলে তোমাকে রাখব না। সে প্রায় ফোনে কার সাথে কথা বলে আমি জানতে চাইলে আমাকে মারধর করে। মিনারা আরও বলে, যে আপা আমি অন্তঃসত্ত্বা।সে আমাকে বাচ্ছা নষ্ট করার কথা মারধর করে।

মিনারার বোন আরও বলেন, যে আমার বোন আত্মহত্যা করেনি তার গলায় ফাঁস দেওয়ার কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি, যে দাগ ছিল সেটা আঘাতের।

এই মৃত্যুর বিষয়ে বাবুলের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, তার বাসায় তালা দেওয়া, একাধিক বার মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।

প্রতিবেশীরা জানান, তারা মৃত্যুর দিন থেকে পলাতক। এই রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে এস আই রাকিব হোসেনের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, লাশ দেখে প্রাথমিক ভাবে আত্মহত্যা বলে মনে হয়েছে, তবে সঠিক বলতে পারছি না। লাশ পোষ্টমর্টম করা হয়েছে, রিপোর্ট আসলে সঠিক তথ্য জানা যাবে।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে, রিপোর্ট আসার পর জানাতে পারব কি হবে।

বিলাল হোসেন মাহিনী
যশোর

RELATED ARTICLES

Most Popular