Friday, November 15, 2024
Homeশিক্ষাঙ্গনঅ্যাওয়ার্ডের টাকায় সংগ্রামী নারীদের সেলাইমেশিন ও ল্যাপটপ বিতরণ

অ্যাওয়ার্ডের টাকায় সংগ্রামী নারীদের সেলাইমেশিন ও ল্যাপটপ বিতরণ

নবদূত রিপোর্টঃ

‘শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২২’ এর অর্থ দিয়ে নারী দিবসে সংগ্রামী নারীদের সেলাই মেশিন ও ল্যাপটপ প্রদান করেছেন ছাত্রলীগের সহসভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য তিলোত্তমা সিকদার।

আজ মঙ্গলবার বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে সেলাই মেশিন ও ল্যাপটপ প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা বিশ্বে নারীর ক্ষমতায়নে অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছেন। বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের আরেক নাম শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, ‘সমস্যার কথাতো সবাই বলে, কিন্তু সমস্যা সমাধানের পথ দেখায় শুধু সাহসীরা। তেমনই এক সাহসী নারী হচ্ছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যিনি ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে প্রাইমারি স্কুলে নারীদের জন্য ৬০ শতাংশ কোটা চালু করেন। এসএসসি পাস করেই নারীরা এ চাকরি করতে পারবেন বলে ঘোষণা দেন।’

এ সময় জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, ‘স্বল্প আয় দিয়ে পুরো মাসে কীভাবে সংসার চালাতে হয়, তা একজন নারীই ভালো জানেন। তাই আমি বলি একজন নারী পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অর্থনীতিবিদ।’

জুনায়েদ আহমেদ পলক আরও বলেন, ‘আজকাল অনেকেই দেখি প্রকাশ্যে স্ত্রীর প্রশংসা করতে পারেন না। যারা বান্ধবী-বোনের প্রশংসা করতে পারেন না, তারা কাপুরুষ। যারা প্রকাশ্যে স্ত্রী, বোন ও বান্ধবীর প্রশংসা করেন, তাঁরাই প্রকৃতপক্ষে সুপুরুষ। আমাদের সবাইকে মা বোন বান্ধবী সহকর্মীদের সমান চোখে দেখতে হবে।’

এ সময় ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির করোনাকালীন কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে পলক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪১ সালের ভিশন বাস্তবায়নের জন্য ছাত্রলীগকে জ্ঞান-বিজ্ঞানে আগাতে হবে।’

অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘আমরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি। যাঁরা নারীদেরকে সাংবিধানিকভাবে সমান অধিকার দিয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী নারী অধিকার নিয়ে সব সময় সোচ্চার ছিলেন। তাই নারীদের যোগ্যতা অর্জন করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘নারী অধিকার নিয়ে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। নারীরা আজ পিছিয়ে নেই। তারা পুরুষের পাশাপাশি সমানভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তারই বাস্তব উদাহরণ আমাদের ছাত্রলীগনেত্রী তিলোত্তমা সিকদার।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘শুধু চাকরি কিংবা ব্যবসার ক্ষেত্রে কোনো কোটা দিয়ে নারী স্বাধীনতা অর্জন হয় না। আমি মনে করি ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে রাষ্ট্র গঠনে নরীদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়াই নারীর স্বাধীনতা।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন।

আরও বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মারুফা আক্তার পপি এবং নাভানা গ্রুপের সিইও ওয়াহেদ আজিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে ৫০ জন নারী ও ৫ জন মেধাবী শিক্ষার্থীর মাঝে সেলাই মেশিন ও ল্যাপটপ প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানের আয়োজক ছাত্রলীগের সহসভাপতি ঢাবির সিনেট সদস্য তিলোত্তমা সিকদার বলেন, ‘আমার জীবনের পরম সৌভাগ্য আমি ওআইসির মতো একটি সংস্থা থেকে প্রধানমন্ত্রীর নামে এ পুরস্কারটি পেয়েছি। সেখান থেকে যে অর্থ পেয়েছি তার সঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং নাভানা গ্রুপ আমাকে সহযোগিতা করেছে। আমার এ কাজে আরও সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’

উল্লেখ্য, করোনাকালীন সংকটময় মুহূর্তে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ এবং বৈশ্বিক যুবাদের অনন্য মানবিক অবদানের স্বীকৃতি দিতে ‘ঢাকা ওআইসি ইয়্যুথ ক্যাপিটাল ২০২০’-এর অধীনে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর নামে ‘শেখ হাসিনা ইয়্যুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২০’ প্রদান করা হয়। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় যুবকদের একক ও দলীয়ভাবে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার, সার্টিফিকেট ও সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। মানবিক কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এ অ্যাওয়ার্ড পান ডাকসুর সাবেক সদস্য তিলোত্তমা শিকদার।

২০২০ সালে করোনার সময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রমজান মাসে হিন্দু ধর্মাবলম্বী হয়েও তিলোত্তমা শিকদার রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে রোজাদারদের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করে সাড়া ফেলেন। এর আগে তিলোত্তমা শিকদার ঢাবি ছাত্রীদের জন্য ক্যাম্পাসে ১০ টাকায় স্যানিটারি ন্যাপকিন দিতে ভেন্ডিং মেশিন স্থাপনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন।

RELATED ARTICLES

Most Popular