Friday, December 27, 2024
Homeজাতীয়অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নের দাবি সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির

অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নের দাবি সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির

নবদূত রিপোর্ট:

অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে
নারী অধিকার নিয়ে কাজ করা ৬৬টি সংগঠনের জোট সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি।

মঙ্গলবার (৮ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নারী সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এ দাবি জানান তারা।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের  সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়। এতে সংগীত পরিবেশন করেন নবনীতা চৌধুরী ও ছায়া কর্মকার । নৃত্য পরিবেশন করেন অংকিতা সাহা (শিশু শিল্পী) এবং আবৃতিসংগঠন পঞ্চকন্যার পাঁচজন আবৃতিশিল্পী শারমিন লাকি, তামান্না তিথি, নাজনীন নাজ, বুশরা তিথি এবং হাবিবা হ্যাপী আবৃতি পরিবেশন করেন ।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শেষে সমাবেশে ঘোষণা পাঠ করেন গণস্বাক্ষরতা অভিযানের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার রেহেনা বেগম। তিনি বলেন স্বাধীনতার  ৫০ বছরে নারীর অবদানে  আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক খাতের বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হলেও নারী ও কন্যাশিশুরা ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাম্প্রদায়িক সহিংসতাসহ বিভিন্ন দ্বন্দ্বের কারণে ধর্ষণসহ বিভিন্ন সহিংসতার শিকার হচ্ছে।

নারীর প্রতি বৈষম্য ও সহিংসতা বন্ধ করে, সম্পদ- সম্পত্তিতে সমান অধিকার ও সমঅংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে তিনি এসময় কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন।

দাবিগুলো হলো- সংবিধানে প্রদত্ত  সমঅধিকার বাস্তবায়নের জন্য আইনগত পদক্ষেপে নিতে হবে এবং প্রতিষ্ঠানিক ভিত্তি গড়ে তুলতে হবে; সম্পদ- সম্পত্তিতে নারীর সমান অধিকার ও সম অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে হবে; নারী ও কন্যার প্রতি নির্যাতনকারীদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও প্রশাসনিক আশ্রয়, প্রশ্রয় দেয়া বন্ধ করতে হবে; দেশে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে; ধর্ষণের মামলার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার করতে হবে; পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রন আইন, ২০১২ এর বাস্তবায়ন করতে হবে; ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় নারীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে; অভিবাসী নারী শ্রমিকদের সার্বিক নিরাপত্তা, অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত  করতে হবে; করোনাকালীন ও করোনা পরবর্তী সময়কে বিবেচনায় নিয়ে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ আরও জোরদার করতে হবে; জাতিসংঘের সিডও সনদের অনুচ্ছেদ-২ ও ১৬(১)(গ) এর উপর হতে সংরক্ষণ প্রত্যাহার করে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে ইত্যাদি।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের  সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, আমরা মনে করি নারী এবং পুরুষের শ্রমে কোনো বিভাজন থাকবে না। নারী পুরুষের সম্পর্কের মধ্যে সমতা থাকতে হবে। যেখানে পুরুষই নারীর অভিভাবক হবে এই সম্পর্ক গড়ে তোলা যাবে না। এবং এগুলো করতে হলে অবশ্যই সম্পত্তির অধিকার দিতে হবে এবং অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নে বিরোধীদের সচেতন করতে, রাজি করতে তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, আজকের ২০২২ সালের ৮ মার্চ নারী আন্দোলনের জন্য আরেকটি নতুন ফলক উম্মোচন করল। আজকে সমতাকে স্বীকার করে নিয়েছে রাষ্ট্র। নারীর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতা দূর করে নারী পুরুষের সমতার দর্শনকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এই সমতা আমাদের এক নতুন সমাজ উপহার দিতে পারবে।

সমাবেশ শেষে একটি র‌্যালী অনুষ্ঠিত হয়। র‌্যালীটি শহীদ মিনার চত্বর থেকে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে সোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন ঢাকা ওয়াই ডাব্লিউসিএ-এর উপাধ্যক্ষ ফ্লোরেন্স গোমেজ।
এসময় সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, মহিলা আইনজীবী পরিষদ, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, কর্মজীবী নারী, জাতীয় শ্রমিক জোট, নারী মৈত্রী, নারী ঐক্য পরিষদ সহ বিভিন্ন সংগঠনের দুই শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

RELATED ARTICLES

Most Popular