পোশাকের বৈচিত্র্যকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে একদল শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘যেমন খুশি তেমন পরো’ নামে এক অবস্থান কর্মসূচিতে তারা পোশাকের বৈচিত্র্যকে স্বাগত জানায়।
এসময় ‘বৈচিত্র্যই সাধারণ, বৈচিত্র্যই বাংলাদেশ’; ‘বস্তু পোশাককে ক্ষমতা দিল কে?’ ‘তনু কেন ধর্ষিত হল?’ ‘সংস্কৃতি কারও বাপের না’ ‘আমি বলি না নিপাত যাক বলি সব থাক’ ইত্যাদি প্লেকার্ড হাতে তাদের অবস্থান করতে দেখা যায়।
অবস্থান কর্মসূচিতে তারা বলেন, মূল্যবোধ এবং সংস্কৃতি সদা-পরিবর্তনশীল। আজ থেকে ১০১ বছর আগে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করেছিল, তখন সেখানে নারী শিক্ষার্থী ছিল একজন। এখন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা আলাদা করে গুণতে হয় না। অর্থাৎ উচ্চশিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ না করার যে দেশিয় মূল্যবোধ এবং সংস্কৃতি পূর্বে ছিল তা পরিবর্তন হয়েছে, সময়ের সাথে, মানসিকতার সাথে। আমরা এই পরিবর্তনকে স্বাগত জানাই। অন্যের স্বাধীনতার উপর খবরদারি না করে, নিজের স্বাধীনতা চর্চার মাধ্যমে সমাজে যে পরিবর্তন আসে, তার পক্ষে আমাদের অবস্থান।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী অরুণিমা তাহসীন বলেন, আমরা বলছি বৈচিত্র্যই সাধারণ, তবে এক্ষেত্রে এটা প্রয়োজনীয় না এই সাধারণটাকে কারও ভালো লাগতে হবে অথবা খারাপ লাগতে হবে।সাধারণ হলো সাধারণ। অন্যের সৌন্দর্যকে শ্রদ্ধা না করতে পারি, আমরা তাদের উপর হামলে না পরি, তাকে কটুক্তি না করি। আমরা আহ্বান করেছি বোরকা পরে আসুন, পাঞ্জাবি পরে আসুন, হিজাব পরে আসুন। অর্থাৎ আপনি যাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন সেটা পরুন। এটাই আমার দেশের বৈচিত্র্য, এটাই আমাদের দেশের সংস্কৃতি।
উল্লেখ্য, ঢাকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী গত ১৮ মে নরসিংদী রেলস্টেশনে পোশাকের কারণে গালিগালাজ ও মারধরের শিকার হন। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক সমালোচনা হলে নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ভৈরব রেলওয়ে থানায় মামলা করে। তরুণীকে হেনস্তা ও মারধরের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত মার্জিয়া আক্তার ওরফে শিলাকে পুলিশ ৩০ মে গ্রেপ্তার করে। গত মঙ্গলবার শিলার জামিন আবেদনের শুনানিতে উচ্চ আদালত এ বিষয়ে কথা বলেন। সেই মন্তব্যকে গত ২৫ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ শিক্ষার্থী ব্যানারে কিছু শিক্ষার্থী অভিবাদন ও সাধুবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করে। এর পরেই নর্থ সাউথ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে হাইকোর্টের মন্তব্যকে সাধুবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করা হয়।