রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনের নামে উত্তোলিত কোটি টাকার হদিস মিলছে না। দরপত্র ও কার্যাদেশ ছাড়াই গভর্নিং বডির অনুমোদনে দুই কোটি সাড়ে ছয় লাখ টাকার প্রকল্প পাস করে প্রতিষ্ঠানের ফান্ড থেকে অগ্রিম বিলের মাধ্যমে দেড় কোটির বেশি টাকা তোলা হয়েছে। উত্তোলিত এসব টাকার মধ্যে মাত্র ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ের হিসাব মিলেছে। এ সংক্রান্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্যসূত্র জানায়, ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের উন্নয়ন ও সৌন্দর্য্যবর্ধন কাজ জন্য গত বছরের ২০ অক্টোবর গভর্নিং বডির সভায় অনুমোদন করা হয়। এজন্য ২ কোটি ৬ লাখ ৫৩ হাজার ৮৪৪ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়।
সূত্র থেকে আরও জানা গেছে, ভিকারুননিসার সাবেক অধ্যক্ষ ফওজিয়ার দায়িত্বকালে গত বছর উন্নয়নকাজের নামে ১৯টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। বিধি মোতাবেক সরকারি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়নকাজের ক্ষেত্রে পাঁচ লাখ টাকার ঊর্ধ্বে হলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের (ইইডি) অনুমোদন সাপেক্ষে দরপত্র আহ্বান ও কার্যাদেশ প্রদান করতে হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিভাবক প্রতিনিধি সিদ্দিকী নাছির উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে ১২ সদস্যের একটি কমিটির মাধ্যমে নিয়মবহির্ভূত একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয় গভর্নিং বডি। তারা বিভিন্ন সময় অগ্রিম বিল দিয়ে এক কোটি ৫৯ লাখ ৩৫ হাজার ২৩৭ টাকা উত্তোলন করলেও এ প্রকল্পের জন্য কোনো দরপত্র ও কার্যাদেশ দেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তার সাড়া মেলেনি।
অধ্যক্ষের রুমে তালা দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে সিদ্দিকী নাছির উদ্দিন বলেন, ‘পুরো ক্যাম্পাসে সিসিটিভি রয়েছে। সেটি তো অধ্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ করেন, সেটি তিনি প্রকাশ করেননি কেন? তিনি শুধু মুখে এসব মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। তিনি অফিসে আসেন না, কোনো খবর রাখেন না। অধ্যক্ষ সবার সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। সেটি একজন অভিভাবকের সঙ্গে তার ফোনালাপে ধরাও পড়েছে।’ এ বিষয়ে তারা বিব্রত বলেও জানান তিনি।
জানতে চাইলে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহার জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি যোগদানের পর থেকে উন্নয়নকাজের টাকার জন্য সিদ্দিকী নাছির উদ্দিন আমার সঙ্গে ভীষণ বাজে আচরণ করেছেন। দুই দফায় আমার রুমে তালা দিয়েছেন। পরে চেয়ারম্যান স্যার নাছিরের সঙ্গে কথা বলে তালা খুলে দেন।’
তিনি বলেন, ‘দুই কোটি টাকার কাজ দরপত্র ও কার্যাদেশ ছাড়া করা হয়েছে। এসব ঘটনার কারণে আমি ইইডিতে চিঠি দিয়ে তদন্ত করতে বলেছি। তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে বলেও জানান অধ্যক্ষ কামরুন নাহার।