নবদূত রিপোর্ট:
সাবেক অর্থমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগনেতা শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার। ২০০৫ সালের আজকের দিনে তিনি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যেবাজারে ঈদ-পরবর্তী এক জনসভা শেষে ফেরার পথে গ্রেনেড হামলায় নির্মমভাবে নিহত হন। তবে, দীর্ঘ ১৭ বছর পরও শেষ হয়নি তাঁর হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজ।
মামলার আসামিরা বিভিন্ন কারাগারে থাকায় এবং সাক্ষীরা উপস্থিত না হওয়ায় মামলার বিচারে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিলেটের পিপি অ্যাডভোকেট সারোয়ার আহমেদ আব্দাল। হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজে বিলম্ব হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন মামলার বাদী ও হবিগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খানও। তিনি বলেন, ‘এ সরকারের আমলে বিচারকাজ শেষ না হওয়ায় আমি হতাশ। আশা করি দ্রুত বিচার সম্পন্ন হবে।’
মামলার প্রথম চার্জশিটের আসামি অ্যাডভোকেট সেলিম আহম্মেদ বলেন, ‘প্রথম চার্জশিটে যারা নির্দোষ, তাঁরা দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি চান। আবার কেউ কেউ চান বিলম্ব হোক। আমরা চাই, মামলা যেন দ্রুত নিষ্পত্তি হয়।’
২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি বিকেলে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যেরবাজারে ঈদ-পরবর্তী এক জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন কিবরিয়া। জনসভা ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। বক্তব্য শেষে মঞ্চ থেকে নেমে যখন তিনি সহকর্মীদের নিয়ে বৈদ্যেরবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফটকে যান, তখন দিনের আলো নিভে প্রায় সন্ধ্যা। হঠাৎ করেই বিকট শব্দ। হুড়োহুড়িতে চারদিকে গগনবিদারী চিৎকার। আর্জেস গ্রেনেডের আঘাতে অনেকেই ক্ষতবিক্ষত। সেখানে শাহ এ এম এস কিবরিয়া গুরুতর আহত হলে তাঁকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পর তিনি মারা যান। এ ছাড়া ঘটনাস্থলে মারা যান তাঁর ভাতিজা শাহ মনজুরুল হুদা, স্থানীয় আওয়ামী লীগকর্মী ছিদ্দিক আলী, আবদুর রহিম ও আবুল হোসেন। আহত হন আরও ৭০ জন।
এ ঘটনার পরদিন ২৮ জানুয়ারি তৎকালীন হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ খান বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন। মামলার তদন্তে কাজ করে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা। কিন্তু মামলাটির স্বাভাবিক তদন্ত না হয়ে দলীয় বিবেচনায় পরিচালিত হতে থাকে। মামলার তিন দফা চার্জশিট দেওয়ার পর হত্যা ও বিস্ফোরক মামলা দুটি সিলেটের দ্রুত বিচার আদালতে বিচারাধীন। কিন্তু, সাক্ষীদের উপস্থিতি না থাকায় থমকে আছে বিচারকাজ। উভয় মামলায় ১৭৩ জন সাক্ষী থাকলেও হত্যা মামলায় ৪৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিস্ফোরক মামলায় সাক্ষ্য প্রদান আরও কম হয়েছে।